আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৬ থেকে ১০, এইচএসসি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, এইচএসসিঃ শিক্ষার্থীরা, আজকে তোমাদের জন্য একটি অনুচ্ছেদ নিয়ে এসেছি তা হল “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ” সাথে থাকছে তিনটি নমুনা যা সকল শ্রেণীর জন্য উপযুক্ত। অনুচ্ছেদটিতে আমরা পড়ার সুবিধার জন্য বিভিন্ন প্যারায় বিভক্ত করে দিয়েছি, কিন্তু তোমরা পরীক্ষায় সম্পূর্ণ একটি প্যারায় লিখবে। তাহলে চল এখনি শিখে ফেলি গুরুত্বপূর্ণ এই অনুচ্ছেদটি।

পোস্টের বিষয়বস্তুঅনুচ্ছেদ লিখন
অনুচ্ছেদ এর টপিকআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহক্লাস ৬,৭,৮,৯,১০, এসএসসি, এইচএসসি
মোট নমুনা দেয়া আছে৩টি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৬, ৭

বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি একটি স্মরণীয় অধ্যায়। একদিকে যেমন অর্জনের দিন, অন্যদিকে হারানোর বেদনায় অশ্রুসজল দিন। ১৯৪৭ সাল থেকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত পশ্চিম পাকিস্তানিরা প্রথমেই আমাদের ভাষাকে নিয়ে চক্রান্ত শুরু করে। পাকিস্তানের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল মুহম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেয়। সাথে সাথে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বীর বাঙালি। তারা ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। মিছিল মিটিং-এ চারদিক উত্তাল করে তোলে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি উপেক্ষা করে সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা। পাকিস্তান শাসক বাহিনী মিছিলের উপর গুলিবর্ষণ করে। সে গুলিতে রাজপথে শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, শফিকসহ আরও অনেকে। কিন্তু দমননীতি দিয়ে বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। জীবনের বিনিময়ে বাঙালি ভাষাকে রক্ষা করেছে। অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলা ভাষাকে, মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। তার পর থেকে প্রতি বছর এ দিনটির স্মরণে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আবদুল গাফফার চৌধুরী লিখেন- “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”- গানটি। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ভাষার জন্য আত্মত্যাগের এই বিরল ঘটনাকে সম্মান দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৮

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারসহ বেশ কয়েকজন। মাতৃভাষার জন্য তাঁদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। তখন থেকেই দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর ২০০০ সাল থেকে সারা বিশ্বে দিনটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।

একুশে ফেব্রুয়ারিকে এভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভাষা-আন্দোলনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলে। এর একটি নতুন মাত্রাও তৈরি হয়। পৃথিবীর মাতৃভাষাসমূহের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে এবং পৃথিবীর কোনো ভাষা যাতে হারিয়ে না যায় তা রোধ করতে এই দিবস অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়। ‘শহিদ দিবস’ বাংলাদেশের জাতীয় দিবস, যা সমগ্র বিশ্বের ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – এসএসসি ও এইচএসসি

জাতিসংঘের ঘোষিত বিভিন্ন দিবসের সাথে যুক্ত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। ১৯৪৭ সালে বর্তমান বাংলাদেশ যখন পূর্ব বাংলা নামে পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল, তখন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে একমাত্র উর্দুকে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। তখন উর্দুর পাশাপাশি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে মর্যাদা জানানোর দাবি জানায় বাংলার বাঙালিরা। কিন্তু সে দাবি সরকার অগ্রাহ্য করে। এর ফলে শুরু হয় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা আরও অনেকে। বাঙালির আপসহীন আন্দোলনের ফলে অবশেষে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা স্বীকৃতি লাভ করে। ভাষা তথা সংস্কৃতি রক্ষার এ গৌরবময় ইতিহাস বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি ও স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৯৮ সালে ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ সংগঠনের উদ্যোগে বাংলাদেশি সদস্য-রাষ্ট্রে হিসেবে দিবসটিকে (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করার আবেদন জানায়। অবশ্য এ বিষয়ে কানাডা প্রবাসী রফিক ও সালাম নামের দুজন দেশপ্রেমিক ব্যক্তি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু জাতিসংঘে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব করতে হলে ব্যক্তি নয়, সদস্য রাষ্ট্রকে আবেদন করতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে তারা বাংলাদেশ সরকারকে প্রস্তাব করার অনুরোধ জানান। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন ইউনেসকোর পূর্ণাঙ্গ সাধারণ সভায় বাংলাদেশ কর্তৃক উপস্থাপিত প্রস্তাবটি ১৮৮ সদস্য-রাষ্ট্রে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করে। এভাবে আমাদের ভাষা দিবস (২১ ফেব্রুয়ারি) পরিণত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষায়। তারপর থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য হলো প্রতিটি মাতৃভাষাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া।

মোট তিনটি নমুনা ও সাথে একটি ছবিসহ আজকে আমাদের উপস্থাপনা, কেমন হয়েছে কমেন্টে জানাতে পারো। সামনে অনুচ্ছেদের অন্যান্য সকল টপিক নিয়ে আমরা হাজির হব, সাথেই থেকো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top