তোমার দেখা একটি মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখ: হ্যালো কাছের প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে তোমরা শিখবে বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে বা বান্ধবীকে পত্র লিখার আসল নিয়ম। আমরা মূলত এখানে ৩টি নমুনার মাধ্যমে তোমাদের দেখাবো কিভাবে পত্র লিখতে হবে, প্রয়োজনে তোমরা কিছু লেখা কম বা বেশি করতে পারবে ইচ্ছামত। তাহলে প্রথমে আমাদের লেখাগুলো দেখে যেকোন একটা শিখে নাও।
| পোস্টের বিষয়বস্তু | পত্রলিখন |
| আজকের পত্রের টপিক | বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র |
| প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ | ক্লাস ৬,৭,৮, এসএসসি, এইচএসসি |
| নমুনা আছে | ৩টি |
বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র – নমুনা ১
ধানমণ্ডি, ঢাকা
৯ জুলাই, ২০২৬
প্রিয় সোহেল,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি বাড়ির সবাইকে নিয়ে বেশ ভালো আছ। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। গতকাল তোমার একটি চিঠি পেয়েছি। আমাদের স্কুলে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলা সম্পর্কে তুমি জানতে চেয়েছ। প্রতিবছরের মতো এবারও আমাদের স্কুলে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটা ছিল আমার ওপর। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই একটু ব্যস্ত ছিলাম। মেলা উপলক্ষে স্কুলটিকে মনোরমভাবে সাজানো হয়েছিল।
মেলায় প্রায় ৮০টি স্টল স্থান পায়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ছাত্র- ছাত্রীরা এতে অংশ নেয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলো খোলা থাকত। মেলায় খুদে বিজ্ঞানীরা তাদের বিভিন্ন প্রজেক্ট প্রদর্শন করে। প্রজেক্টগুলোর মধ্যে ছিল বায়োগ্যাস প্লান্ট, শব্দদূষণ প্রতিরোধ যন্ত্র, আর্সেনিকমুক্ত পানির প্লান্ট, আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ পদ্ধতি, বজ্রপাত নিরোধ যন্ত্র ইত্যাদি। মেলার প্রতিটি স্টলেই ছিল উপচেপড়া ভিড়। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক মেলা দেখতে আসত। মেলার এ কয়টা দিন আমার খুব আনন্দে কেটেছে।
যদিও অনেক বড় একটা দায়িত্ব আমার কাঁধে ছিল। দায়িত্বটা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে জীবনে নতুন একটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হলো, যা আমাকে পরবর্তী জীবনে পথ চলতে সাহায্য করবে । তোমার লেখাপড়া কেমন চলছে জানিও। তোমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম দিও। চিঠি পাওয়া মাত্রই উত্তর দিও।
ইতি-
মহাসিন হাসান
বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র – নমুনা ২
১১-০৫-২০২৫
১৯, ডিস্টিলারি রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা–১২০৪
প্রিয় জুয়েল,
আমার ভালোবাসা নিও। তোমার কাছে অনেকদিন লিখব লিখব করে লেখা হয়ে ওঠেনি। তাই আজ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে শুরু করছি যে যেভাবেই হোক লিখবই। অবশ্য তোমাকে একটা আনন্দঘন খবর দেওয়ার জন্য মনটা উৎসুক ছিল। সব মিলিয়ে শেষপর্যন্ত তোমার কাছে লেখা হচ্ছে এটাই বড় কথা।
গত ০১. ০৫. ২০২৫ তারিখে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল মাঠে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনটি আমার কাছে আনন্দ ও গৌরবের দিন। দিনটি আমার জীবনে স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমার এ আনন্দঘন দিনটির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তোমার কাছে উপস্থাপন করছি।
বিজ্ঞান মেলার শোভাবর্ধনের জন্য স্কুল মাঠটি নানা রকম সাজে সজ্জিত করা হয়েছিল। স্কুলের প্রবেশ দ্বারটি নানা রকম ফুল দিয়ে খুবই সুন্দরভাবে সাজানো হয়। সকাল দশটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ঐ অনুষ্ঠান চলছিল । নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী বিভিন্ন স্কুলের প্রতিযোগিরা তাদের তৈরি প্রদর্শনীয় বস্তু নিয়ে নিজ নিজ স্টলে বসে পড়ে। আমাদের স্কুলও উক্ত মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল। আমরা সরু তার দিয়ে টেলিফোন বানিয়েছিলাম এবং ইঁদুর মারার কল বানিয়েছিলাম । দুটো প্রদর্শনই সবার কাছে সমাদৃত হয়েছিল।
এছাড়া দর্শকবৃন্দ অত্যন্ত আগ্রহের সাথে প্রতিটি স্টল ঘুরে দেখেন। বিজ্ঞানের কৃতিত্ব দেখে আনন্দ লাভ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহাকাশ বিজ্ঞান বিভাগের মহাপরিচালক ড. শাহাদাত হোসেন । তিনি সব স্টল ঘুরে দেখেন এবং আমাদেরকে উৎসাহিত করেন। মেলা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাহেব। আমাদের টেলিফোন যন্ত্রটি বিচারকদের বিচারে ২য় পুরস্কার হিসেবে ২০০০.০০ টাকার সম্মান বয়ে আনে।
যাক, আজ আর নয় । সাক্ষাতে অনেক কথা হবে । তোমার আব্বা-আম্মাকে আমার শ্রদ্ধা জানিও।
ইতি-
তোমারই আরিফ
আরো দেখুন: ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি
বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র – নমুনা ৩
কদমতলা রোড, পুরাতন কসবা, যশোর
১৪. ১০. ২৫ ইং
সুপ্রিয় কবির,
অফুরন্ত প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইলো। অনেকদিন তোমার কোন চিঠিপত্র পাইনি। মাঝে মাঝে মোবাইল বা টেলিফোনেও তোমার সাথে কথা হতো। এখন সেটাও বন্ধ।
আজ তোমাকে লিখতে বসলাম একটি আনন্দ অনুভবের কথা জানানোর উদ্দেশ্যে। এই অনুভূতি মোবাইল টেলিফোনে নয়, লিখে পাঠানোই সবচেয়ে ভালো। সেটা হলো, আমাদের স্কুলে অনুষ্ঠিত আকর্ষণীয় একটি ‘বিজ্ঞান মেলা’ দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই বিজ্ঞান মেলায় অনেক নতুন বিষয় দেখানো হয়েছে। যেমন- গ্যাসবাতি, সৌরচুল্লি, পুরনো টিউবে নতুন করে আলো জ্বালানো, বায়ুকল ইত্যাদি। মেলা দেখে মনে হলো আমাদের দেশে অনেক ক্ষুদে বিজ্ঞানীর জন্ম হয়েছে। তারা বাঙালি সমাজ ও বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে। এলাকার একুশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে আমাদের স্কুল প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
বিজ্ঞান মেলায় তোমাকে আমাদের সঙ্গে পেলে আরও ভালো লাগতো।
ইতি-
জাহিদ হাসান
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: পত্রের শেষে ডাকটিকেট সংবলিত খাম ও ঠিকানা ব্যবহার অপরিহার্য ]
আমরা সবসময়ই চাই তোমাদের সার্বাধিক নমুনা উপহার দিতে, তার ধারাবাহিকতায় আজকে ৩টি লিখেছি। আশা করি এতে তোমাদের সামনের পরীক্ষার জন্য বেশ উপকারি হবে।




