বইমেলা অনুচ্ছেদ – ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেনি ও এসএসসি

বইমেলা অনুচ্ছেদ

বইমেলা অনুচ্ছেদ ক্লাস ৬, ৭, ৮, ১০, এসএসসিঃ হ্যালো শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমরা একটি খুবই জনপ্রিয় ও প্রচলিত অনুচ্ছেদ শিখব। অনুচ্ছেদটি হল- বইমেলা বা, পরীক্ষায় একুশে বইমেলা নামেও আসতে পারে। আমরা ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৪টি ভ্যারিয়্যান্ট লিখেছি, ছবিও যুক্ত করেছি। তোমার কাছে যেই নমুনা ভাল লাগে এবং তোমার ক্লাসের জন্য উপযোগী সেটাই শিখবে।

পোস্টের বিষয়বস্তুঅনুচ্ছেদ লিখন
অনুচ্ছেদ টপিকবইমেলা
প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহক্লাস ৬, ৭, ৮, এসএসসি, এইচএসসি
মোট নমুনা দেয়া আছে৪টি (১টি চিত্রসহ)

বইমেলা অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৬

আজকাল বাংলাদেশে বইমেলা ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ বিশেষ উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন শহরে এগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠান থেকে এর যাত্রা শুরু। বইমেলাতে অধিকাংশ প্রকাশকই বইয়ের দোকান দেয়। বাইরের বই আমদানিকারকরাও স্টল দিয়ে থাকে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং বাংলা একাডেমি নিজ নিজ স্টল নিয়ে বসে। বইমেলাতে বিপুল সংখ্যক আকর্ষণীয় ও সুসজ্জিত বইয়ের দোকান দেখা যায়। এ মেলাতে আকর্ষণীয় কমিশনে বই কিনতে পারা যায়। বইমেলা এভাবেই সাধারণ লোকের বই পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। বই ছাড়াও রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, লোকসংগীত ও আবৃত্তির ক্যাসেট এখানে বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন করা হয়। মেলার কোনো একটি কোণায় হালকা খাবারের দোকান থাকে। বইমেলা একটি মহৎ অভিযান এবং এটি সাফল্যের দাবিদার।

বইমেলা অনুচ্ছেদ – ক্লাস ৭

বইমেলা হলো বইকে উপলক্ষ করে লেখক ও পাঠকের মিলনমেলা। আনন্দঘন পরিবেশে বই কেনা-বেচার সুযোগ ঘটে বইমেলায়। এই মেলাতে বইয়ের প্রকাশকগণ তাঁদের নতুন ও পুরনো বই নিয়ে দোকান সাজান, পাঠক সেখান থেকে তাঁর পছন্দের বই দেখেশুনে কিনতে পারেন। এটা বইমেলার সবচেয়ে বড়ো সুবিধা। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে বইমেলার সূচনা হয় ১৯৭২ সালে মুক্তধারার প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহার উদ্যোগে। ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হয় বাংলা একাডেমি ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’।

এই মেলায় শুধু বই কেনাবেচাই নয়, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বাংলা একাডেমি গ্রহণ করে। ২০১৪ সাল থেকে বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর এই মেলার উদ্বোধন করেন। বইমেলা মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে; বিশেষভাবে শিশু-কিশোররা বাবা- মার সাথে বইমেলায় গিয়ে নিজেদের পছন্দের বইটি সংগ্রহ করতে পারে, নতুন নতুন বইয়ের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। বইমেলাকে কেন্দ্র করে অনেক লেখক তাঁদের নতুন বই প্রকাশ করেন; পাঠকও নতুন নতুন ধারণার সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।

বইমেলা অনুচ্ছেদ – অষ্টম শ্রেণি

১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে প্রতিবছর একুশের বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাঙালি সত্তার মর্মমূলে গাঁথা মহান একুশে ফেব্রুয়ারি তথা ভাষা আন্দোলনের অমর স্মৃতি বহনকারী একুশের বইমেলা বাঙালির সংগ্রামী চেতনা ও সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্যেরই এক তাৎপর্যপূর্ণ অনুষঙ্গ। শহিদ দিবস’ হিসেবে জাতীয় মর্যাদায় এ দিনটি নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। এ দেশের মানুষ ভাষাশহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এবং বইমেলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে। ১৯৯৯ সালে এ দিবসটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস‘ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুণ। সেই সাথে একুশের বইমেলাও পেয়েছে আলাদা গৌরবদীপ্ত মাত্রা। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী একুশের বইমেলা বেশ জাঁকজমকভাবে চলতে থাকে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বইমেলার উদ্বোধন করেন। কয়েকশত প্রকাশক তাদের জন্য বরাদ্দকৃত স্টল সাজিয়ে বই প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। হাজার হাজার দর্শক, শ্রোতা, ক্রেতা আনন্দমুখর পরিবেশে নানা ধরনের সুদৃশ্য ও মূল্যবান বইয়ের সাথে, লেখক ও প্রকাশকদের সাথে পরিচিত হন। বই দেখে ও বই কিনে তাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তারা এখানে আলোচনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। খাবার স্টলে বসেও কবি-লেখকদের সঙ্গে আড্ডা দেন অনেকেই। সাংবাদিক ও ক্যামেরার ভিড় চোখে পড়ার মতো। শিশু কিশোর যুবক বৃদ্ধ সবার উপযোগী দেশপ্রেম, ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ভ্রমণবৃত্তান্তের ঝকঝকে বইয়ের সমাবেশ স্বাভাবিকভাবেই মন কাড়ে। একুশের বইমেলা বই কেনা ও পাঠের অভ্যাস গঠনে, পারস্পরিক ভাবের বিনিময়ে, প্রবীণ-নবীণদের সংযোগ রচনায় প্রকৃতই এক মিলনতীর্থ।

এছাড়া পড়ুনঃ বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ

বইমেলা অনুচ্ছেদ এসএসসি

মানবসভ্যতা জ্ঞান ও সংস্কৃতির ফসল। আর এ সভ্যতা বিকাশে সুদূর প্রাচীনকাল থেকে যে উপকরণটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে তা হলো গ্রন্থ বা বই। কেননা বই হলো জ্ঞানভাণ্ডার এবং জ্ঞানচর্চার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বই সভ্যতার সূচক; তথ্য যোগাযোগের মাধ্যম; অতীত চিন্তা ও বর্তমান তথ্যের সমাবেশ। বই মানুষকে পূর্ণতা দেয় এবং মানব জীবনকে সমৃদ্ধ করে। বই সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক উন্নতি বিধানে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাই বইমেলা হলো প্রাণের মেলা, মননের মেলা। বইমেলায় একই সঙ্গে বহু ও বিচিত্র ধরনের বইয়ের সমাবেশ ঘটে। ১৯৬৬ সাল থেকে বইমেলা শুরু হয় । থেকে বইমেলা শুরু হয়। স্বাধীনতার পর তা ক্রমশ আনুষ্ঠানিক ব্যাপ্তি লাভ করে।

১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি প্রথম একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন করে। ১৯৭৪ সালে এ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে বাংলা একাডেমিতে একুশের অনুষ্ঠানমালার ব্যাপ্তি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এক নতুন যুগের সূচনা করে। পরবর্তী তিন বছরে এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৮ সালে এসে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ মেলায় পায়। রূপ নেয়। সরকার একে পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থমেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি গ্রন্থমেলা আয়োজনে বাংলা একাডেমির সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়।

১৯৮৪ সালে গ্রন্থমেলার জন্য বিধিবদ্ধ নীতিমালা প্রণীত হয় এবং গ্রন্থমেলার নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। ১৯৮০ সালে বাংলা একাডেমির গ্রন্থমেলায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। গত কয়েক বছর ধরে ৪৫০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান স্টল বরাদ্দ পায়। বর্তমানে হাজার হাজার পাঠকের সমাগম হয় বলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার স্টল বসে। বইমেলা আমাদের জাতীয় মণ্ডল আশা-আকাঙ্ক্ষার উদ্দীপনার, জাগরণের মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক। বইমেলা শুধু পাঠক-প্রকাশক-লেখকের মেলা নয়, বইমেলা সমগ্র জাতির।

তো এই ছিলো আজকের বইমেলা অনুচ্ছেদের সকল নমুনা। ভাল করে শিখে নাও, আর কোন জিজ্ঞাসা বা অভিযোগ থাকলে অবশ্যই জানাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top