বন্ধুর মায়ের/পিতার মৃত্যুতে সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্রঃ আজকে আমরা পত্র লেখা শিখবো। মনে কর তোমার বন্ধুর পিতা অথবা মা মারা গেছে, এখন তুমি তোমার বন্ধুকে সমবেদনা ও সান্তনা জানিয়ে একখানা পত্র লিখবে। আমরা এখানে পাঁচটা নমুনা লিখেছি, দুইটা মা ও তিনটা পিতার। সাথে ডাকটিকেট লেখার নিয়ম দেয়া হয়েছে। এছাড়া দুইটা ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে, আশা করি তোমাদের শিখতে অনেক সহজ লাগবে।
| পোস্টের বিষয়বস্তু | পত্রলিখন |
| পত্রের টপিক | বন্ধুর মায়ের/বাবার মৃত্যুতে সান্তনা |
| প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ | ক্লাস ৬,৭,৮, এসএসসি, এইচএসসি, চাকরি পরীক্ষা |
| নমুনা আছে | ৫টি (২টি ছবিসহ) |
বন্ধুর পিতার মৃত্যুতে সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র
স্টেশন রোড, রংপুর
০১ অক্টোবর, ২০২৫
প্রিয় ইশতিয়াক,
নাদিমের চিঠিতে তোমার পিতার মৃত্যুসংবাদ শুনে মর্মান্তিক দুঃখ পেলাম। তোমাকে সমবেদনা জানানোর বা সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। কেননা পিতা হারানোর বেদনা কেবল সেই বোঝে, যে তার পিতাকে হারিয়েছে। তবে তোমার মানসিক অবস্থা আমি অনুভব করতে পারছি। তোমার এই সংকট মুহূর্তে কেবল একটি কথাই বলব, ধৈর্যধারণ করে তোমাকে এ সংকট মোকাবিলা করতে হবে। কারণ তুমিই বড় ছেলে। অনেক বড় দায়িত্ব তোমার। স্রষ্টা তোমাকে যেন সেই শক্তি ও ধৈর্য দান করেন।
তোমার পিতা আমাকে যে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়েছেন তা আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। তাঁর মতো একজন ভালো মানুষের এ আকস্মিক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর বিদেহী আত্মা বেহেস্ত লাভ করুক- এই কামনা করি। তোমার মাকে আমার শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিও। ভালো থেকো।
সমবেদনাসহ তোমার বন্ধু
অনীক
বন্ধুর মাতৃবিয়োগের সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র
মানকোন উপজেলা, বগুড়া
০২ জানুয়ারি, ২০২৭
প্রিয় ওয়াসীম,
আমার ভালোবাসা ও আন্তরিক সমবেদনা রইল। গতকাল তোমার পত্র পেয়ে তোমার মাতৃবিয়োগের কথা জানতে পারলাম। খুবই মর্মাহত হলাম। তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই । তোমার মা যে তোমার কত বড় আশ্রয় ছিল, সে আমি জানি। কিন্তু কী করা যাবে বল, মরতে তো সবাইকেই হবে। দু’দিন আগে আর পরে । পৃথিবীতে যে জন্মেছে, মৃত্যুর স্বাদ তো তাকে গ্রহণ করতেই হবে। তোমাকে আমাকেও একদিন মরতে হবে। কাজেই দুঃখ না করে মায়ের আত্মার শান্তির জন্য সৎ ও মহৎ কর্ম কর। স্রষ্টার দরবারে প্রার্থনা করো যেন তিনি তাঁকে বেহেশত নসিব করেন। তাহলেই তিনি শান্তি পাবেন এবং তোমার কাজটাও হবে নেক সন্তানের কাজ। দুঃখ করো না ভাই। আল্লাহই তোমার সহায় হবেন।
দোয়া করছি তোমার আম্মা জান্নাতবাসী হোক। আল্লাহ তোমাকেও ধৈর্যধারণ করার শক্তি দান করুন। তোমাদের বাড়ির সবাইকে আমার সালাম ও সমবেদনা জানিও।
ইতি-
তোমার বন্ধু,
শামীম
বিশেষ দ্রষ্টব্য: পত্রের শেষে ডাকটিকেট সংবলিত খাম ও ঠিকানা ব্যবহার অপরিহার্য
বন্ধুর মায়ের মৃত্যুতে সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র
২৫ জুলাই, ২০২৬
লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা।
সুপ্রিয় মোহনা,
কিছুক্ষণ আগে তোমার চিঠি পেয়েছি। চিঠি পড়ে আমি স্তম্ভিত। তুমি লিখেছ তোমার মায়ের আকস্মিক মৃত্যুর কথা। আমার কাছে এখনো সব অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো! আমি খুবই মর্মাহত। তোমাকে সান্ত্বনা দেবার মতো ভাষা আমার নেই। শুধু জেনো, তোমার এ মর্মবেদনার আমিও সমান অংশীদার।
ছোটবেলায় আমি মাকে হারিয়েছি। মায়ের আদর-ভালোবাসা কাকে বলে জানতাম না। তোমার মা আমার সেই অনুভূতি জাগিয়েছিলেন। তাই তাঁকে আমি মা বলে ডেকেছি। আজ আমি আবার মা-হারা হলাম । মানুষ মরণশীল – এই নির্মম সত্যটা আমাদের জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। কাজেই দুঃখ না করে মায়ের আত্মর শান্তির জন্য তিনি যেমনটি ভেবেছিলেন ভবিষ্যতে আমাদের সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। পড়াশোনায় আত্মনিয়োগ করো। বাবা ও ছোট ভাইয়ের প্রতি খেয়াল রেখো। কয়েক দিন পরে তোমার দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা। নিজের পড়ার কাজে ডুবে থাকলে এ বেদনা হয়তো ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে।
পরীক্ষার কারণে আমি তোমার এই দুঃসময়ে কাছে থাকতে পারলাম না, এটাও আমার জন্য খুব কষ্টকর। কায়মনোবাক্যে কামনা করি, তুমি এই প্রতিকূলতা যেন কাটিয়ে উঠতে পারো। আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। আল্লাহ তোমার সহায় হোন। তোমার বাবাকে সালাম জানিও। ছোট ভাই সিয়ামের প্রতি রইল আমার অসীম স্নেহ।
তোমার বন্ধু
সুমনা
প্রেরক: সুমনা ৮০ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা । | প্ৰাপক: মোহনা প্রযত্নে মো. ফিরদাউস তারাবনিয়াছড়া কক্সবাজার। |
নোটঃ উপরে ডানপাশে ডাক টিকিট লিখতে হবে।
বন্ধুর বাবার মৃত্যুতে সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র
রতনপুর, ভোলা
তারিখ: ১৮-১১-২০২৫ ইং
প্রিয় আমান,
ভালোবাসা নিও। গতকাল তোমার একখানা চিঠি হাতে পেয়েছি। চিঠিতে তোমার পিতার মৃত্যুসংবাদ জেনে খুবই ব্যথিত হয়েছি। তোমার বন্ধু হিসেবে তিনি আমাকে আপন ছেলের মতোই ভালোবাসতেন; আদর-স্নেহ করতেন। তার এ আকস্মিক মৃত্যুসংবাদে আমি খুবই মর্মাহত। বর্তমানে তোমার মানসিক অবস্থা যে কতটুকু বেদনা বিজড়িত তা আমি অনুভব করতে পারি। তোমার এ সংকটময় মুহূর্তে তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। তবে একটি কথাই বলব যে, মানুষ মরণশীল। কেউ অমর নয়। পৃথিবীর সবাইকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এ দিকটি বিবেচনা করে ধৈর্যধারণ না করে উপায় নেই। বিপদে ধৈর্যধারণের কথা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনেও উল্লেখ করা হয়েছে। ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আল্লাহ রয়েছেন এটা কুরআনেরই শাশ্বত বাণী। তাছাড়া স্বজনহারার ব্যথার মধ্য দিয়ে আল্লাহ মানুষের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। তাই তোমাকে ধৈর্যধারণ করতে হবে।
এছাড়া তুমি পরিবারের বড় সন্তান। এ মুহূর্তে তোমার ওপর সংসারের যে গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তা যথাযথভাবে পালন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আশা করি তোমার ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করে অনাগত দিনগুলোকে মধুময় করে তুলবে। মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন তোমাদের সবাইকে এ শোক সহ্য করার শক্তি দান করেন এবং তোমার বাবাকে জান্নাতবাসী করেন।
তোমার আম্মাকে আমার সালাম এবং ছোটদের স্নেহ দিও। আল্লাহ তোমাদের সহায় হোন। তোমাদের সকলের জন্য আমার শুভকামনা রইল।
ইতি-
তোমার বন্ধু
আনিস
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: পত্রের শেষে ঠিকানাসহ ডাকটিকেটের স্থান চিহ্নিতপূর্বক খাম এঁকে দেওয়া অত্যাবশ্যক]
বন্ধুর পিতৃবিয়োগের সান্তনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র
বনানী, ঢাকা
৭ই জুলাই ২০২৫
প্রিয় দেবাশিস,
আমার আন্তরিক সমবেদনা নিও। আজ তোমার চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে জানতে পেরেছি তোমার পিতৃবিয়োগের মর্মান্তিক দুঃখের কথা। তোমার পিতার আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ আমার কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো অনুভূত হয়েছে। তোমার মানসিক অবস্থা যে কতটা খারাপ তা আমি বুঝতে পারছি।
তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। মাতাপিতা হারানোর বেদনা সত্যিই খুবই কষ্টকর। আর এ কষ্ট সহজে লাঘব হয় না। তারপরও আমাদের ধীরে ধীরে কষ্ট ভুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হয়’। আমাদের হাতে কিছু নেই, সবই সৃষ্টিকর্তার অপার লীলা। সকল সৃষ্টিকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে। তাই আমাদেরও সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তোমার বাবার মৃত্যুকে আমিও সহজভাবে মেনে নিতে পারছি না। তিনি আমার অত্যন্ত প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। তুমি যে বেদনায় আজ নিমজ্জন করছ, আমি একই বেদনায় নিমজ্জিত। তবু আমাদের সবকিছু মেনে নিয়ে নিজের মনকে বোঝাতে হবে। মনে রাখবে, তোমার পিতা চলে গিয়ে তোমার ওপর গুরুদায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তোমাকেও তাঁর মতো আদর্শ ও মহৎ মানুষ হতে হবে। এছাড়াও তোমার ওপর সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব বর্তেছে। ছোটো দুই ভাইবোনকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বও তোমার। দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে মনকে শান্ত করে জীবনক্ষেত্রে এগিয়ে যাও। তোমার ওপর বর্তিত কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারলেই তোমার পরলোকগত পিতার আত্মা শান্তি পাবে।
সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা, তিনি যেন তোমার বাবাকে স্বর্গবাসী করেন আর তোমাকে কর্তব্য পালনের শক্তি দান করেন। তোমার মাকে প্রণাম ও ছোটো ভাইবোনকে স্নেহ জানিও। তুমি শীঘ্রই দুঃখ-বেদনা ভুলে স্বাভাবিক হবে- এ প্রত্যাশায় ইতি টানলাম।
ইতি তোমার বন্ধু
অভিজিৎ
[পত্র লেখা শেষে খাম এঁকে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয় (উপরে দেয়া আছে)]
প্রতিটি পত্র লেখার পরেই সুন্দর করে ঠিকানাসহ ডাকটিকেট সম্বলিত একটি খাম আঁকতে হবে। খাম আঁকতে কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবে।




