দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ ৪টি সহজ ভ্যারিয়ান্টে যা বাংলাদেশের সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে লেখা। ছোট, মাঝারি ও বড় করে সব ধরণের স্ট্রাকচার ফলো করে আমরা লিখেছি, সময় নস্ট না করে শিখা আরম্ভ করে দাও।
| পোস্টের বিষয়বস্তু | ভাবসম্প্রসারণ লিখন |
| ভাবসম্প্রসারণ শিরোনাম | দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ |
| প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ | ক্লাস ৬,৭,৮, এসএসসি, এইচএসসি |
| নমুনা দেয়া আছে | ৪টি |
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ – ক্লাস ৬, ৭
মূল বক্তব্য: নীতিহীনতাই দুর্নীতি। নীতিহীন ব্যক্তি স্বার্থ-অন্ধ। এ ধরনের ব্যক্তি দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। তারা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
ভাব-সম্প্রসারণ: নৈতিকভাবে উন্নত, সৎ, বিবেকবান মানুষ যে পদেই থাকুন না কেন, তিনি সমাজ ও দেশের বড় সম্পদ। তাঁকে দিয়ে উপকার না হলেও অন্তত ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে না। অপরদিকে নৈতিকতা বিবর্জিত ব্যক্তি যতই উচ্চ আসনে অবস্থান করুক না কেন, তিনি মোটেও শ্রদ্ধার পাত্র নন। পদ মর্যাদার কারণে তাকে হয়তো মানুষ সামনে কিছু বলে না কিন্তু পেছনে অন্তর থেকে ঘৃণা করে। তার দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কাও বেশি। কারণ, তিনি স্বার্থ-অন্ধ, বিবেকবর্জিত। তিনি সবসময় নিজের স্বার্থ সিদ্ধির মতলবে থাকেন। স্বার্থ-অন্ধ ব্যক্তি নিজের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার কাজেই ব্যস্ত থাকেন। সমাজের কল্যাণ, দেশের মঙ্গলের কথা তিনি ভাবেন না। জাতীয় জীবনের উন্নতি, সমৃদ্ধির কথা ভাবতে তার বিবেক সায় দেয় না। এজন্য বিবেকবর্জিত, দুর্নীতিগ্রস্ত লোক দেশের সকল উন্নতির পথে বাধাস্বরূপ।
উপসংহার: দুর্নীতি বাংলাদেশের প্রধান অভিশাপ। বেশ কয়েকবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ছিল লজ্জাজনক অবস্থান। আমাদেরকে এ কলঙ্কজনক অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যে দেশের জনগণ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করতে পেরেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও তাদের বিজয়ী হতে হবে। তাহলেই দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি সম্ভব হবে।
আরো পড়তে পারেন: একতাই বল ভাবসম্প্রসারণ
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ – ক্লাস ৮
ভাব-সম্প্রসারণ: নীতির বিরুদ্ধাচার-ই দুর্নীতি। অর্থাৎ প্রচলিত আইন ও নীতি-নৈতিকতাবিরোধী কাজকে দুর্নীতি বলে। জাতীয় জীবনে দুর্নীতি বিরাজ করলে তা জাতির সর্বনাশ ডেকে আনে। এর প্রভাবে একটি জাতির স্বপ্ন ও সম্ভাবনা অঙ্কুরেই শেষ হয়ে যেতে পারে; হারিয়ে যেতে পারে অতীত ঐতিহ্য। সত্য ও ন্যায় পথ একটি জাতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। কেননা সত্য ও ন্যায়ের পথে অগ্রসর হলে অবশ্যই সে জাতির উন্নতি সহজ হয়। তাই সত্যের সাধনা জাতির প্রধান কাজ।
ন্যায়নীতির পথে চলে জাতি উন্নতির শীর্ষে উঠতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব জাতি উন্নতির দিকে অগ্রসর হয়েছে, তার পেছনে কাজ করেছে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা। অন্যদিকে জাতীয় জীবনে যদি দুর্নীতির প্রবেশ ঘটে তবে সে জাতির উন্নতির পথ হয়ে যায় রুদ্ধ। তখন জাতির সামনে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। অন্যায় বা দুর্নীতি যে জাতির মধ্যে বিরাজ করে সে জাতি নানা অনাচারে মগ্ন হয়। ফলে লোকে জাতির উন্নতির কথা ভুলে গিয়ে নিজের সুখ, সুবিধা ও স্বার্থের কথা ভাবতে থাকে। কীভাবে অন্যকে ঠকিয়ে নিজের লাভের পরিমাণ বাড়ানো যায় দুর্নীতিবাজ মানুষ সে চিন্তাই করে । এক্ষেত্রে নিজের লোভই বড় হয়ে দেখা দেয়; অন্যের মঙ্গলের কথা লোকের ভাবনায় আসে না।
দুর্নীতি প্রত্যেকটি জাতির বিশেষ করে মানবজাতির জীবনে অভিশাপস্বরূপ। কোনো জাতির জীবনে যদি দুর্নীতি প্রবেশ করে তবে সেখানে স্বার্থের যে খেলা চলে তাতে জাতির উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে দুর্নীতিকে জাতীয় জীবনে অভিশাপ বিবেচনা করা হয়। এ অভিশাপ জাতির সর্বনাশ ঘটায়। মানুষের জীবনে তখন নেমে আসে চরম দুঃখ-দুর্দশা। আইনের শাসন আর স্বচ্ছ মানসিকতাই যেকোনো জাতিকে দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করে সমৃদ্ধির আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ – এসএসসি
মূলভাব: ক্ষয়রোগ যেমন একজন মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়, দুর্নীতিও তেমনি একটি দেশ, জাতিকে ধ্বংসের মুখে মূলভাব নিক্ষেপ করে।
ভাবসম্প্রসারণ: স্বাভাবিকভাবে যা ন্যায়নীতি ও সত্য গর্হিত তাই দুর্নীতি। অর্থাৎ, মানুষ যখন আত্মস্বার্থ সংরক্ষণে সমাজের আর দশজনের অধিকার বঞ্চিত করে অন্যায়ভাবে রীতি ও নীতিকে লঙ্ঘন করে সমাজ স্বার্থ ও দেশ-জাতির স্বার্থকে তুচ্ছ করে আপন স্বার্থ চরিতার্থ করে তখন তাকে দুর্নীতি বলে। দুর্নীতি আমাদের জাতীয় জীবনে এক দুষ্টক্ষত স্বরূপ। আমাদের জীবনের প্রাত্যহিকতার সাথে, জাতির রক্তের কোষে কোষে, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আমাদের দেশের মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে রাষ্ট্র ও সমাজের শিরা-উপশিরায় দুর্নীতির ঠাসবুনন লক্ষ করা যাচ্ছে।
একজন নাগরিকের জীবনকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে চালানোর নিশ্চয়তা প্রদান যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব, তেমনি সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার মানুষের জন্মগত অধিকার। কিন্তু অন্যকে বঞ্চিত করে নীতিকে লঙ্ঘন করে আপন স্বার্থ সংরক্ষণে যে অনৈতিকতার প্রতিযোগিতা সমাজে চলে তা যেমন সমাজ মানুষের, তেমনি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। দুর্নীতির কারণে সমাজে যাদের অর্থবল ও জনবল নেই তারা নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়, পক্ষান্তরে নীতি গর্হিত পথে দশের সুযোগ সুবিধা কুক্ষিগত করে কিছু মানুষ অর্থ ও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে। সত্য ও ন্যায়ের পথই জাতীয় উন্নয়নের মূল পথ। কিন্তু সত্য ও ন্যায়কে পায়ে মাড়িয়ে মিথ্যাকে, অন্যায়কে জড়িয়ে ধরলে জাতীয় উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। দুর্নীতি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির নিশ্চয়তা প্রদান করে। দুর্নীতির কালো পথে দুর্বলরা সম্পত্তি ও সুযোগ হারায়। প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পন্ন স্বার্থপর দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা জোর জবরদস্তির আশ্রয় নেয়। রাষ্ট্রের স্বচ্ছ আইনের জলে দুর্নীতির বিষক্রিয়ায় সবই বিষাক্ত হয়ে ওঠে। উচ্চ আদালত থেকে শুরু করে একেবারে গ্রামের বিচার সালিশ পর্যন্ত দুর্নীতিসিক্ত হয়ে জাতীয় জীবনের সত্য ও ন্যায়ের ঈশ্বর মৃত ঘোষিত হয়।
বিত্তবানেরা সমাজে সকল ধরনের অনিয়ম অপরাধ করেও বেঁচে যায় দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ বলয়ের কারণে। কেননা দুর্নীতির কারণে আইন ন্যায় পথে চলে না। দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়, আমলা, বিচারক, উকিল, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ জেলা প্রশাসক, থানা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষক, চেয়ারম্যান, মেম্বর- তথা সমাজ ও দেশপরিচালনা ও গঠনে বিভিন্ন নেটওয়ার্কে জড়িত সকল পর্যায়ের মানুষ যখন দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় তখন জাতীয় উন্নয়ন যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষ হয় বঞ্চিত। অসদুপায়ে অর্থ উপার্জন পথ প্রশস্ত হওয়ায় সমাজে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ সকল ধরনের অপরাধ বেড়ে যায়। অর্থের বিনিময়ে সাদা হয় কালো, রাত হয় দিন এবং সত্য হয় মিথ্যা। দেশের ব্যাবসাবাণিজ্য, শিক্ষাদীক্ষাসহ সমস্ত ক্ষেত্রে দুর্নীতির হাওয়ায় রাষ্ট্র তরীটি ক্রমাগত এগিয়ে চলে অন্ধকার রাজ্যে। তখন অন্ধকারকেই সত্য মনে হয়। দুর্নীতি তখন আর দুর্নীতি থাকে না, দুর্নীতিটাই স্বাভাবিক নীতিতে পরিণত হয়। এমনিভাবে দূর্নীতিগ্রস্ত হওয়ায় লোভ-লালসা ও স্বার্থের বহ্নিশিখায় জাতীয় উন্নতিমূলক বোধাবোধগুলো জ্বলে পুড়ে নিঃশেষিত হয়। ফলে দুর্নীতি জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই দুর্নীতি কেবল সাধারণ মানবজীবনে চরম দুঃসহ বেদনা ও যন্ত্রণার সৃষ্টিই করে না, বরং দুর্নীতি জাতীয় জীবনে চরম অভিশাপ হিসেবে কাজ করে।
মন্তব্য: দুর্নীতিমুক্ত না হলে জাতীয় জীবনের সমৃদ্ধি, অগ্রগতি পদে পদে বিনষ্ট হয়।
আরো দেখুন: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারণ
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ – এইচএসসি
মুলভাব: যেকোনো জাতির উন্নয়নে দুর্নীতি একটি বড়ো বাধা। কোনো জাতির ওপর যখন দুর্নীতি ভর করে তখন সেই জাতির উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জন্ম নেয় ব্যাপক অরাজকতা । সুতরাং দুর্নীতি একটি জাতির জন্য অভিশাপেরই বিষয়।
সম্প্রসারিত ভাব: সাধারণত ব্যক্তিগত স্বার্থোদ্ধারের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করাই হলো দুর্নীতি । অর্থাৎ মানুষ স্বেচ্ছাচারিতার মধ্য দিয়ে প্রচলিত নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে নিজের স্বার্থে কাজ করে, তখনই দেখা দেয় নানা ধরনের বিশৃঙ্খলতা। তাই দুর্নীতি জাতির জীবনে একটি ভয়াবহ ব্যাধির মতো খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্রই। দুর্নীতিগ্রস্ত যেকোনো দেশে অতি দ্রুত ভেঙে পড়ে তার প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ফলে দেশের প্রচলিত আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। ফলে সুযোগ-সন্ধানীগোষ্ঠী দ্রুত গড়ে তোলে সম্পদের বিশাল পাহাড়। অন্যদিকে, দরিদ্র মানুষের জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ অমানিশা, তারা দারিদ্র্যের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে যায়। ফলে সমাজে ধনী ও দরিদ্রের বিরাট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এ অবস্থায় দেখা দেয় খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হানাহানিসহ নানা ধরনের অপকর্ম। রাষ্ট্রের মধ্যে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের দলাদলি, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মেঘমালা; গণতান্ত্রিক-ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে। ফলে, লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম হয়। পৃথিবীর প্রায় সবদেশেই দুর্নীতি একটি জটিল সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে উন্নত দেশগুলোতে এর মাত্রা সহনশীলতাকে অতিক্রম করেনি। অন্যদিকে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল কিংবা অনুন্নত দেশে এর মাত্রা ইতোমধ্যেই সীমা ছাড়িয়ে ফেলেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি আলোচিত নাম।
প্রথমত, যে অসাম্প্রদায়িক আর উন্নয়নের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি; প্রতিষ্ঠিত হয়নি সর্বস্তরে মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার । বরং সামাজিক, আর্থনীতিক আর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাপক দুর্বৃত্তায়ন। দুর্নীতির দুষ্ট ক্ষতকে স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশত বৎসর পার হতে চলল-তবুও নিরাময় করা যায়নি। পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়সহ এমন কোনো স্থান নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। চাকরি, ব্যবসায়, বাণিজ্যে সীমাহীন ঘুষের দৌরাত্ম্যে জনমনে ব্যাপক হতাশা বিরাজ করে। অনেকের ধারণা এদেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই মুখ্য। কিন্তু এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রাজনীতিক দলের প্রচণ্ড মাত্রার স্বেচ্ছাচারিতা; ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার হীন-মানসিকতা। সব সরকারের সময় প্রায় সর্বত্রই নিয়োগ হয় সেই সরকারের রাজনীতিক দলের পরিচয়ে। ফলে লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি চর্চার কুফল পড়ে দেশের মানুষের ওপর। এ অবস্থায় গ্রাম-গঞ্জেও চলে সাংঘাতিক মাত্রার মহাজনী সুদের ব্যবসায়। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে।
সরকার এবং প্রশাসনের দুর্বলতাকে পুঁজি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে মাঝে-মধ্যেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পত্র-পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায়। শিশু খুন, ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে পিছিয়ে দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের দুর্নীতি বিষয়ে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা রোধ করা গেলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২-৩ শতাংশ বেড়ে যেত এবং মাথাপিছু আয় -দ্বিগুণ হতো। তাই শুধু বাংলাদেশই নয়, বরং দুর্নীতিগ্রস্ত যেকোনো দেশের চিত্রই এরূপ। কিন্তু এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। বরং সর্বস্তরের মানুষের সদিচ্ছাই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে শুধু সরকারকে দোষ দিলে চলবে না। একটি জাতির অনেক ভালো অর্জনও থাকে তাই এই দুর্নীতি যেন ম্লান করে দিতে না পারে, সেদিকে সকলের নজর দিতে হবে। আর নীতি-নৈতিকতার চর্চা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দুর্নীতিকে উচ্ছেদ করা যেতে পারে।
শেষকথা: উপসন দুর্নীতি জাতির উন্নতির প্রধান অন্তরায়। দুর্নীতির অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত হতে হলে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস একান্ত প্রয়োজন। তবেই একটি জাতি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে পারে।




