ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ – সকল শ্রেণি উপযোগী

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ: প্রিয় শিক্ষার্থী, ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা, আজকে আমরা একটি অনুপ্রেরণামুলক ভাবসম্প্রসারণ শিখবো তা হল- “ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ”। তোমরা যাতে সহজে শিখতে পার, সেজন্য আমরা একাধিক নমুনা লিখেছি। তোমাদের যেই ভাবসম্প্রসারণটি পছন্দ হবে এবং সহজে শিখতে পারবে বলে মনে হবে, সেটিই শিখবে। তাহলে সময় নস্ট না করে এখনি শুরু করে দাও।

  • পোস্টের বিষয়বস্তু: ভাবসম্প্রসারণ লিখন
  • ভাবসম্প্রসারণ টপিক: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
  • প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ: ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, এসএসসি, এইচএসসি
  • নমুনা দেয়া আছে: ৩টি

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ – ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম শ্রেণি

ভাবসম্প্রসারণ: জীবন কর্মময়। প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন কাজ করতে হয়। পৃথিবীতে কোন কাজই বিনা বাধায় করা যায় না। সব কাজেই কিছু না সুবিধা-অসুবিধা ও বাঁধা-বিঘ্ন থাকে। সব অসুবিধা ও বাধা বিঘ্নকে জয় করতে পারলেই কাজে সফলতা আসে। এ সফলতার জন্য প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছাশক্তির। মূলতঃ সকল কাজের প্রেরণা দানকারী শক্তিই হল ইচ্ছা। দৃঢ় ইচ্ছ দৃঢ় মনোবলের সৃষ্টি করে। ফলে সকল বাধা-বিঘ্নকে অনায়াসে পরাজিত করা যায়। প্রবল ইচ্ছার সাথে কোন কাজ করলে সে কাজ যত কঠিন হোক না কেন, এক সময় তা সফলতার সাথে সমাধা করা সম্ভব হয়।

যাদের মনের জোর থাকেনা তারা সামান্য বাধা-বিপত্তিতেও ভয়ে পিছিয়ে যায়। আর যাদের ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকে তারা যে কোন রকমের বাধাকে মোকাবেলা করে লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যেতে পারে অবলীলাক্রমে । পৃথিবীতে যারা কর্মী, তাঁরা প্রত্যেকেই প্রবল ইচ্ছাশক্তির অধিকারী ছিলেন । আজ পর্যন্ত জগতে যত বড় বড় সাফল্য এসেছে। যেমন- বিজ্ঞানের যে-কোন ক্ষেত্রেই হোক সব ক্ষেত্রেই বিপুল পরিমাণ বাধা ছিল। যাঁরা সফলতা অর্জন করেছেন তাঁরা ইচ্ছাশক্তির দ্বারাই এ সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে পেরেছেন। সম্রাট নেপোলিয়ন তাঁর সেনাবাহিনীসহ আল্পস পর্বতের কাছে গিয়ে অসীম উৎসাহে বলে ওঠেন- ‘There will be alps.’ অর্থাৎ আমার বিজয় অভিযানের মুখে আল্পস পর্বত থাকবেনা। আত্মশক্তি বা ইচ্ছাশক্তির বলেই তিনি আল্পস ডিঙাতে পেরেছিলেন।

অপরদিকে ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রবল ইচ্ছা থেকেই দীর্ঘদিনের সাধনায় ৪০ বছর বয়সে নবুয়্যত প্রাপ্ত হন। এদিকে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন রাজ্যসুখ ছেড়ে প্রবল সাধনার বলে । তাঁর এ সাধনার পেছনে সক্রিয় ছিল একমাত্র ইচ্ছা। আসলে প্রবল ইচ্ছা নিয়ে চেষ্টা করলে মানুষ সফলতা লাভের উপায় খুঁজে পায়। অর্থাৎ মানুষের সকল কাজের মূলই হচ্ছে ইচ্ছাশক্তি।

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ – ৯ম, ১০ম শ্রেণি

ভাব-সম্প্রসারণ: প্রবল ইচ্ছাই কোনো কাজকে সমাধানের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। “Where there is a will, there is a way.” এ প্রবাদ দ্বারা বুঝায় যে মানুষ তার লক্ষ্যে পৌছতে পারে যদি তার ইচ্ছা প্রবল হয় । জীবন পুষ্পশয্যা নয় । পৃথিবী এক সংগ্রামক্ষেত্র । মানুষকে এখানে বিবিধ বিরোধী শক্তির সাথে অবিরত লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। মানবজীবন অন্তহীন সমস্যার আবর্তে আবর্তিত। একমাত্র অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলেই মানুষ তার সমস্ত বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে পৌছতে পারে। ইচ্ছাশক্তি মানুষের মনোবলের হাতিয়ার। একজন মানুষকে জীবনে সাফল্য পেতে তার নিজেকেই পথ করে নিতে হয়। ইচ্ছাশক্তির বলেই মানুষ তার সমস্ত জাগতিক সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয় । প্রতিটি কর্মে কৃতকার্য হয়ে পৌছতে পারে ঈপ্সিত লক্ষ্যে । কঠোর পরিশ্রম ও জ্ঞান ছাড়া কোনোকিছুই অর্জন সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি দুর্বল, যার ইচ্ছাশক্তি ক্ষীণ তাকে হোঁচট খেতে হয়। ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তার জীবনের স্বপ্ন ও সাধনা।

ইতিহাসের খ্যাতনামা বীরপুরুষেরা অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে বলীয়ান হয়ে নিঃশঙ্কচিত্তে রাজ্য জয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এবং অসাধ্য সাধন করতে সমর্থ হয়েছেন। তাঁরা শত বিপদ ও বাধাকে পদদলিত করে একমাত্র ইচ্ছাশক্তিকে পাথেয় করে এগিয়ে গেছেন জীবন পথে। পরিশেষে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন জীবনের সোনালি দিগন্তে । হস্তগত করেছেন ইচ্ছাশক্তি ও ঐকান্তিকতা, প্রবল ইচ্ছাশক্তি একাগ্র সাধনার ওপর নির্ভর করে জীবনের গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য । ইচ্ছা যেখানে চূড়ান্ত এবং গতিশীল, সাফল্য সেখানে অনিবার্য। আমরা পৃথিবীতে আমাদের জন্য স্থান করে নিতে পারি যদি আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাযথ চেষ্টা করতে পারি। অতএব, কোনো কাজে সফল না হওয়ার মূলে বাধাবিপত্তিই মূল কারণ নয়; দৃঢ় ইচ্ছার অভাবই মূল কারণ। যার ইচ্ছার প্রবল শক্তি রয়েছে, তার কাছে সব বাধাবিপত্তি সহজেই হার মানে। মানুষের ইচ্ছাশক্তি দ্বারা যেকোনো অসাধ্য সাধন করা যায়। পৃথিবী প্রতিযোগিতার স্থান। এ প্রতিযোগিতায় আমাদের মস্তিষ্কের ব্যবহার করতে হয় জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য।

আরো দেখতে পারেন: পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ – একাদ্বশ, দ্বাদশ শ্রেণি

মূলভাব: পৃথিবীতে যেকোনো অসাধ্য সাধনে শুধু ইচ্ছা, একাগ্রতা প্রয়োজন। প্রবল ইচ্ছা থাকলে সবকিছু লাভ করা সম্ভব।

ইচ্ছাশক্তি প্রসঙ্গে ফার্গুসান্স বলেছেন, “দৃঢ় ইচ্ছা থাকলে যেকোনো কঠিন সংকটের মোকাবিলা করে জয়লাভ করা যায়।” তাই ইচ্ছাই মানবজীবনের সফলতার চাবিকাঠি। এই পৃথিবীতে মানুষকে অনেক সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। জীবন মানেই সংগ্রাম। যেখানেই জীবনের স্পর্শ সেখানেই শুধু সমস্যা আর সংকট। এখানে সহজলভ্য বলে কোনোকিছুই নেই । তাই সবকিছুই মানুষকে কষ্ট করে লাভ করতে হয়। কিন্তু কোনো কাজই মানুষের অসাধ্য নয় ৷ একাগ্র সাধনা এবং প্রবল ইচ্ছার মাধ্যমে যেকোনো কাজে সফলতা লাভ করা যায়। আজকের এই মানবসভ্যতার উন্নতি ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে শুধু মানুষের ইচ্ছার বলেই । ইচ্ছার বলেই মানুষ মহাশূন্যকে বিজয় করেছে। ইচ্ছার কারণেই মানুষ দক্ষতা লাভ করেছে আর এই দক্ষতাই মানুষকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সফল করে তুলেছে।

যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইচ্ছা অপরিহার্য। ইচ্ছার ফলেই মানুষ যেকোনো কাজে তৎপর হয় এবং জীবনের অর্থ খুঁজে পায়। ইচ্ছা না থাকলে মানুষ কোনো কাজ করতে আগ্রহী হয় না, কোনো কাজেই তার মন বসে না। ইচ্ছার ফলেই যেকোনো কিছু পাওয়ার উপায় বের হয়ে যায় । পৃথিবীতে যে সমস্ত বিখ্যাত ব্যক্তি স্মরণীয় বরণীয় হয়ে আছেন তারা শুধু নিজ নিজ ইচ্ছার কারণেই হয়েছেন । লক্ষ্য অর্জনে অটল থাকাই হলো ইচ্ছা, আর এই ইচ্ছার ফলেই যেকোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। প্রবল ইচ্ছার বলেই নেপোলিয়ন ইউরোপ জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন । প্রবল আগ্রহ আর ইচ্ছার কাছে কোনো প্রতিকূলতাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য থাকতে হবে প্রবল ইচ্ছাশক্তি । যে ব্যক্তি ইচ্ছাশক্তিতে দুর্বল সে জীবনে সাফল্য লাভ করতে পারে না। দুর্দমনীয় ইচ্ছার দ্বারাই যেকোনো বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে জয়লাভ করা যায়।

সিদ্বান্ত: প্রকৃত ইচ্ছাই হচ্ছে সফলতার সিঁড়ি। ইচ্ছা থাকলে অসাধ্যকে সাধন করা সম্ভব। ইচ্ছাশক্তি যত প্রবল হবে সফলতা লাভ করাও তত সহজ হবে । তাই ইচ্ছার একাগ্রতাই হলো সফলতার পূর্বশর্ত।

আজ এই পর্যন্তই, আশা করি তোমরা শিখতে পেরেছ। কোন সমস্যা হলে বা যদি আরো বড় সাইজের কোন নমুনার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাকে কমেন্ট করে জানাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top