যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ – ক্লাস ৬,৭,৮, এসএসসি ও এইচএসসি

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ: আজকে তোমরা নতুন আরেকটি ভাবসম্প্রসারণ শিখবে তা হচ্ছে- যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ। আমরা সর্বাধিক ৫টি নমুনা দিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজিয়েছি। আশা করি এর থেকে ভালো যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ আর কোথাও পাবে না। তাহলে শুরু করে দাও শেখা।

  • পোস্টের বিষয়বস্তু: ভাবসম্প্রসারণ লিখন
  • ভাবসম্প্রসারণ টপিক: যে সহে সে রহে বা, সবুরে মেওয়া ফলে
  • প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ: ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, এসএসসি, এইচএসসি
  • নমুনা দেয়া আছে: ৫টি

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ ক্লাস ৬

ভাব-সম্প্রসারণ: পৃথিবীতে গৌরবদীপ্ত অস্তিত্ব লাভ করতে হলে পরাজয়কে সহজে মেনে নিয়ে পরবর্তী বিজয়ের জন্য সচেষ্ট হওয়া উচিত। আর তাহলেই জীবনযুদ্ধে যথার্থ বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব।

বিশ্ব সংসারে যারা সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল তারাই কেবল টিকে থাকে। সহনশীলতা মনুষ্য জীবনের অন্যতম সাম্যনীতি। পরস্পরকে বুঝতে হলে সহনশীলতার চর্চা আবশ্যক। জীবনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়, কণ্টকাকীর্ণ। পদে পদে রয়েছে বাধা-বিপত্তি, সংঘাত। ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমেই এ সংঘাতময় পথ অতিক্রম করা সম্ভব। নতুবা পরাজয় অনিবার্য। যেকোনো কাজে তাড়াহুড়া করে ফল লাভের আশায় ব্যস্ত না হয়ে ধৈর্যের সাথে অপেক্ষা করলে একদিন সাফল্য আপনা-আপনিই ধরা দেয়। তাই বলা হয়, ‘সবুরে মেওয়া ফলে’। মহামানবদের জীবন- ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায়, তাদের জীবন ধৈর্য বা সহনশীলতায় পরিপূর্ণ। প্রভু যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার পরও তিনি অসহিষ্ণু হননি। মহানবির জীবনালেখ্য সহনশীলতার এক অসামান্য দলিল। তার অসীম ধৈর্য ও অপার করুণার প্রবৃত্তি মানুষকে কল্যাণের পথে টেনে আনে। এমন ধৈর্যশীল ও প্রেমময় মহামানবরাই মানবজাতির মুক্তির দূত।

জীবনে যথার্থ বিজয় লাভ করে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করতে হলে অবশ্যই সহিষ্ণুতা অবলম্বন করতে হবে। সমস্ত প্রতিকূলতা সহ্য করার মধ্যেই সাফল্য নিহিত।

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ ক্লাস ৭

ভাব-সম্প্রসারণঃ এ সংসারে দুঃসময়ে যে ধৈর্য ধরে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সুসময়ের অপেক্ষা করে, কখনো পরাজিত হয় না। ধৈর্যশীলরাই জীবন-যুদ্ধে জয়ী হয়।

পৃথিবীতে জীবন একদিকে যেমন পরম উপভোগ্য, অন্যদিকে পরাজয়, লাঞ্ছনা, হতাশা ও দুর্দশার কশাঘাতে জর্জরিত। রোগ-শোক ও অভাব-অভিযোগ সংসারের নিত্যদিনের চিত্র। তাই পীড়িত মানুষ যন্ত্রণায় অসহায়বোধ করে, আঘাতে-অপমানে জর্জরিত হয়, পরাজয়ের গ্লানিতে নিমগ্ন হয়ে হতাশায় মুষড়ে পড়ে। কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না। খারাপ সময়কে মোকাবেলা করতে হবে। জীবনে পরাজয় থাকে। সে পরাজয় মেনে নিয়ে পরবর্তী যুদ্ধজয়ের সংকল্পে ব্রতী হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এজন্য দরকার অটল ধৈর্য, স্থির সংকল্প এবং যথাযথ পরিকল্পনা। এমন কিছু আঘাত আছে, যার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ধৈর্য ধরলেই ভালো ফল পাওয়া যায়। কারণ, সময় সবচেয়ে বড়ো চিকিৎসক। নিজের করা ভুলেও সব পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে, অযোগ্যতার দায়ে ভোগ করতে হতে পারে কঠিন দণ্ড। তখন ভেঙে না পড়ে ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবকিছু শুরু করতে হবে। তাহলেই মোচন করা সম্ভব হবে পূর্বের গ্লানি। বিপদে অসহায়ত্বকে বরণ করে হাত-পা গুটিয়ে থাকার মধ্যে নয়, তাকে মোকাবিলা করার মধ্যেই মানুষের সংগ্রামশীলতার পরিচয়।

জীবনে যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, তাকে ধৈর্যের সঙ্গে ইতিবাচক দৃষ্টি দিয়ে মোকাবেলা করতে হয়। কারণ, জীবনে দুঃসময় না এলে লড়াই করা শেখা যায় না।

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ ক্লাস ৮

ভাবসম্প্রসারণ: সহিষ্ণুতা একটি বড় গুণ। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে সহনশীলতার কোন বিকল্প নেই। জীবনের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ধৈর্য্যধারণ করতে হয় না।

জীবন সব সময় ফুলশয্যার ন্যায় থাকেনা। চলার পথে কাদা-মাটি-কাঁটার বাধা থাকবেই। প্রতি পদেই বাধা-বিপত্তি ও সংঘাত রয়েছে। আমাদের সংসার মূলত দুঃখময়। সেখানে দুঃখ আছে, বিপদ আছে, লাঞ্ছনা ও অপমান আছে। এখানে ভয়ের ও বিপদের ভ্রুকুটি আছে, নৈরাশ্যের বেদনা আমাদেরকে ছেয়ে ফেলে, পরাজয়ের দুঃসহ গ্লানি আমাদের অন্তরকে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং শোক ও দুঃখের হৃদয়বিদারক আঘাত আমাদের স্বপ্নকে ভেঙে খানখান করে দেয়। এসব বিরুদ্ধ শক্তির সাথে সহনশীলতার মাধ্যমেই যুদ্ধ করে জয়ী হতে হবে। জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে মানুষকে ধীরস্থিরভাবে ও ধৈর্য ধরে সুচিন্তিত পদক্ষেপ না নিলে বিপদ-আপদ মোকাবেলায় মারাত্মক ভুলের কারণে বিপদমুক্ত না হয়ে বিপর্যস্ত হতে হবে এবং তার জন্য যথেষ্ট খেসারত দিতে হয়। পক্ষান্তরে ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে সমস্যা মোকাবেলা করলে তাতে কোন বিপদের সম্ভাবনা তো থাকেই না, বরং সাফল্য আসে। বিপদের বাধা দূর করার মধ্যেই আছে পৌরুষের সার্থকতা। আছে মনুষ্যত্বের বিজয় গৌরব। দুঃখ-শোকের আঘাতে মানুষের সুপ্ত মনুষ্যত্ব অম্লান গৌরবে জেগে ওঠে। আগুনে পুড়ে সোনা যেমন খাঁটি হয় দুঃখ -দুর্দশার আঘাতে আমাদের মনও মালিন্যমুক্ত হয়ে খাঁটি মন হয়।

আমাদের জীবনের প্রতি পদক্ষেপেই ধৈর্য ও সহনশীলনতার প্রয়োজন। সহনশীলতা না থাকলে সংসার জঙ্গলে পরিণত হত। তাই জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে চাই সহিষ্ণুতা।

দেখতে পার: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় ভাবসম্প্রসারণ

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ এসএসসি

মূলভাব: পৃথিবীর ইতিহাস ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও কর্মের ইতিহাস। ধৈর্যধারণকারীই কীর্তিমান ও চির অমরত্ব পায়।

ভাবসম্প্রসারণ: মানবজীবন সংগ্রামশীল। মানুষ তার অস্তিত্ব রক্ষায় নিয়ত সংগ্রামে রত। কেননা প্রকৃতি চায় অস্তিত্বের ধ্বংস- মানুষ তার বিভিন্ন গুণ দিয়ে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে চায়। মানবজীবন চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়- জীবনও নয় পুষ্পশয্যা। কাঁটার শত আঘাত খেয়ে জীবনপথ পাড়ি দিয়ে- তবেই অর্জন করতে হয়। মানবজীবন অর্জনের- প্রাপ্তির নয়। সেজন্য প্রয়োজন অপরিসীম ধৈর্য। মানুষের নানা গুণের মধ্যে ধৈর্য অনবদ্য গুণ। ধৈর্যের তরিতে চড়ে মানুষ পাড়ি দেয় বিক্ষুব্ধ ঊর্মিমুখর সমুদ্র। ধৈর্যের অভাব ঘটলেই মানুষ মধ্যসমুদ্রে ডুবে যায়। পৃথিবীতে যে মানুষ যত বড়ো হয়েছে তা তার ধৈর্য গুণেই। হযরত মুহম্মদ (স)-কে শত্রুরা পাথর ছুড়ে রক্তাক্ত করেছে, কিন্তু তাঁর ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি বলেই তিনি কীর্তিমান মানুষ। পৃথিবীর যে-কোনো প্রান্তে যে-কোনো যুগে যাঁরা ধৈর্যের সাথে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেছেন, তাঁরাই পরবর্তীতে মানবমনে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন।

যাঁরা মরেও অমর, অর্থাৎ যাঁরা আমাদের অন্তরে রয়েছেন, যাঁরা মৃত্যুহীন, অস্তিত্ববান, তাঁরা মূলত জীবনে অপরিসীম কষ্ট সহ্য করেছেন। যিশুখ্রিষ্টের কথাই ধরা যাক। বিজয়ের মালা, সম্মানের মালা তাঁদেরই গলে শোভা পায়- যাঁরা মালা পাওয়ার আগে জ্বালা ভোগ করেছেন। সুতরাং, জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সর্বৈব শর্ত হচ্ছে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। সহিষ্ণুতাই অস্তিত্বের শর্ত। মায়ের অসীম ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতার গুণেই মায়ের উদরে সন্তান বেঁচে থাকে। ব্যক্তি থেকে জাতি- সর্বক্ষেত্রেই টিকে থেকে জীবনকে সমৃদ্ধ করার একমাত্র নিয়ামক হচ্ছে ধৈর্য। ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে জীবনের সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার নামই জীবন। অসহিষ্ণুতা সাফল্যের শত্রু। মানবজীবনে সম্পদ সীমিত কিন্তু অভাব অসীম। সকল অভাবকে মোকাবিলা করতে হয় গভীর ধৈর্যের সাথে। অসহনশীলতা মানবজীবনকে কর্মবিমুখ ও হতাশ করে। জীবনকে করে তোলে অর্থহীন। জীবনসাধনা বিঘ্নিত হয়। তাই সমৃদ্ধ জীবনের নিয়ামক হচ্ছে ধৈর্য- ধৈর্য এবং কেবল ধৈর্য। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতাই জীবনসাধনার ভিত্তি- অস্তিত্বের অভিজ্ঞান।

মন্তব্য: ধৈর্যের ধাতু দিয়ে গড়া মানুষগুলোই শ্রেষ্ঠ মানবের আসন অলংকৃত করে বরণীয় স্মরণীয় হয়ে ওঠে।

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ এইচএসসি

ভাব-সম্প্রসারণ: বৈরী শক্তির সাথে যুদ্ধে আঘাত পেয়েও যে সহ্য করে সেই জয় লাভ করে। প্রকৃতি বিজ্ঞানী ডারউইন-এর ‘Survival of the fittest’ তত্ত্ব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মানুষ তথা জীবজগৎকে নিরন্তর ঝড়-ঝঞ্ঝা, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার পর নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করে ক্ষুধায় অন্ন জোগাড় করতে হচ্ছে, বন্য হিংস্র প্রাণীর হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘকালের জীবনসংগ্রামে মানবজাতির অনেক শাখা পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। যারা টিকে আছে; একমাত্র সহনশীলতার মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জনের জন্যই টিকে আছে। বিভিন্ন আঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষ কেবল অধ্যবসায়ের দ্বারাই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অনেক ত্যাগ, অনেক সংগ্রামের পরই মানুষের আজকের অবস্থান। অতীতে আজকের সভ্য মানুষ ছিল গুহাবাসী, পরিধান করত গাছের পাতা, বাকল, ঝলসে খেত কাঁচা মাংস। একে একে আবিষ্কার করেছে তারা আগুন, পরিধান করেছে বস্ত্র, আবিষ্কার করেছে আজকের সভ্য সমাজ। আজ যে সুসভ্য মানুষ টিকে আছে এটা একমাত্র সহনশীলতার ফলেই সম্ভবপর হয়েছে।

তাইতো এ জগৎ সংসারে সুখের স্থান আছে, তবে তা দুঃখের পাশাপাশি। দুঃখকে জয় না করলে কেউ সুখের মুখ দেখতে পায় না। সুখের মুখ দেখতে হলে দুঃখকে সহ্য করতে হয়। দুঃখ-দারিদ্র্য ও অভাব-অভিযোগের নিকট যে ব্যক্তি মাথা নত করে তার জন্য এটা অভিশাপ। সহনশীল ব্যক্তি অনবরত সংগ্রাম করে ক্রমশ বন্ধুর পথ পেরিয়ে পথে অগ্রসর হয়। সে কখনো কোনো বাধাবিপত্তির কাছে মাথা নত করে না । বা অসহিষ্ণুতার মাধ্যমে মানবজীবনে কোনো সাফল্য লাভই সম্ভব নয়। এর ফলে মানুষ হয়ে পড়ে হতাশাগ্রস্ত। যারা কর্মবিমুখ হয়ে কেবলমাত্র নিয়তির ওপর ভরসা করে জীবনযাত্রা অতিবাহিত করতে চায়, তারা পৃথিবীতে কখনো ভালো কোনো অবদান, কিংবা ভালো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। তার নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে পারে না। এখানে দুর্বলের কোনো স্থান নেই। জগৎ সংসারে দুর্বল সর্বদাই প্রবল পরাক্রমের কাছে পরাজিত হয়। তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে, ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করতে হবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতকে। তাইতো কথায় আছে, “একবার না পারিলে দেখ শতবার”। ধৈর্যের সাথে বারবার চেষ্টার মাধ্যমে সফলতা একদিন আসবেই । কারণ সবুরে মেওয়া ফলে। বস্তুতপক্ষে এ সংসারে যার ঘাত-প্রতিঘাতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার যোগ্যতা আছে তারই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ধৈর্যের সাথে বৈরী পরিবেশ ও বৈরী পরিস্থিতির সঙ্গে সংগ্রাম করে আঘাত সহ্য হ্য করে ও প্রতিঘাত দিয়ে টিকে থাকার মধ্যেই সার্থকতা।

ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কিত যেকোন মতামত আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই তোমার কোন মতামত/অভিযোগ/প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের জানাতে পার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top