লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ (৪টি সহজ ভ্যারিয়েন্ট)

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ ক্লাস ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, এসএসসি, এইচএসসি: আপনি কি লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ এর সন্ধ্যান করছেন, তাহলে আর কস্ট করতে হবে না। আজকে এখানে আমরা লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ এর ৪টি নমুনা লিখেছি, যা ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে ইন্টারমেডিয়েট পর্যন্ত সবার জন্য সহজ সমাধান হবে। তাই আপনার ক্লাস অনুযায়ী বাছাই করে ভাবসম্প্রসারণটি শেখা শুরু করুন।

পোস্টের বিষয়বস্তুভাবসম্প্রসারণ লিখন
ভাবসম্প্রসারণ শিরোনামলোভে পাপ পাপে মৃত্যু
প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহক্লাস ৫, ৬, ৭, ৮, এসএসসি, এইচএসসি
নমুনা দেয়া আছে৪টি (২টি ছবিসহ)

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ – ক্লাস ৫, ৬

ভাব-সম্প্রসারণ: লোভ মানুষের পরম শত্রু। লোভ মানুষকে অন্ধ করে; তার বিবেক বিসর্জন দিয়ে তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। লোভের বশবর্তী হয়েই মানুষ জীবনের সর্বনাশ ডেকে আনে। মানুষ নিজের ভোগের জন্য যখন কোনো কিছু পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করে তাকে লোভ বলে। তখন যা নিজের নয়, যা পাওয়ার অধিকার তার নেই, তা পাওয়ার জন্য মানুষ লোভী হয়ে ওঠে। সে তার ইচ্ছাকে সার্থক করে তুলতে চায়। লোভের মোহে সে সত্য-মিথ্যা, ভালো-মন্দ সব বিসর্জন দেয়। তার ন্যায়-অন্যায় বোধ লোপ পায়। সে পাপের পথে ধাবিত হয়। নিজের স্বার্থের জন্য অন্যের সর্বনাশ করে। এভাবে লোভ মানুষকে পশুতে পরিণত করে। ডেকে আনে মৃত্যুর মতো ভয়াবহ পরিণাম। জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করে তোলার জন্য লোভ বর্জন করা উচিত।

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ – ক্লাস ৭, ৮

ভাব-সম্প্রসারণ: মানবজীবনের ছয়টি রিপুর মধ্যে জঘন্যতম রিপু হলো লোভ। এ লোভ মানবজীবনে চরম ক্ষতি ও অনর্থ সাধন করে। লোভের বশবর্তী হয়েই মানুষ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তাই সে যেকোনো জঘন্য কাজ করতে দ্বিধাবোধ করে না। সে নির্দ্বিধায় পাপ কাজে লিপ্ত হয়। তারপর ধীরে ধীরে সে অবৈধ ও জঘন্য পথে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে সে হয়ে ওঠে পশুর মতো। অন্যদিকে নির্লোভ ব্যক্তি পাপাচারমুক্ত সত্য-সুন্দর জীবন লাভ করে, সকলের ভক্তি শ্রদ্ধা অর্জন করে। লোভী ব্যক্তি ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। সমাজে সবাই তাকে ঘৃণা করে; ফলে সে করুণ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়।

আমরা ঈশপের গল্প থেকে লোভী কৃষক সম্পর্কে ভালো শিক্ষা পেতে পারি। সে খুব তাড়াতাড়ি ধনী হতে চেয়েছিল। এ অবিমৃশ্যকারিতার কারণে সে তার হাঁসটিকে হারিয়েছিল যা প্রতিদিন একটি করে স্বর্ণের ডিম দিত। সুতরাং একথা মনে রাখা একান্ত প্রয়োজন যে, আমাদের পার্থিব জীবনে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। ধনসম্পদ, বিলাসিতা, ক্ষমতা প্রভৃতি কোনোকিছুর লোভ করা যাবে না, তাহলেই জীবন সুন্দর হবে ও আমাদের জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র সুন্দর হবে। পাপী ব্যক্তির লোভ-লালসার সীমা থাকে না। সে ইচ্ছা করলে অন্য কিছু করতে পারে না। তার স্বভাবে যে কালিমা পড়ে গেছে তা দূর করার কোনো পথ নেই।

লোভের মতো এত বড় জঘন্য জিনিস পৃথিবীতে আর দ্বিতীয় কোনোকিছু নেই। লোভ মৃত্যুর ভয় করে না। মৃত্যু তার কাছে তুচ্ছ মনে হয়। সুতরাং লোভের জন্য মানুষ আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয়। লোভকে বর্জন করতে হবে। তবেই জীবন সুন্দর ও সার্থক হবে। নির্লোভ জীবনের মাঝেই নিহিত আছে প্রকৃত সুখ। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত লোভ-লালসা পরিহার করা এবং সৎ পথ অনুসরণ করা।

আরো দেখতে পারেন: অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ – ক্লাস ৯, ১০, এসএসসি

মূলভাব: মানুষের জীবনে চাহিদা অপরিসীম। তবে তা সীমা অতিক্রম করলে এবং তা পূরণে অনৈতিক পথে অর্জন করতে গেলে মানুষের জীবনে অনর্থ ঘটায়।

সম্প্রসারিত ভাব: বেশি পেতে চাইলে তার পরিণাম চিরকালই অশুভ হয়। টাকা অথবা সোনায় অতিরিক্ত লোভ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কোনোকিছু লাভ করার যে অনৈতিক দুর্দমনীয় বাসনা, তাকেই লোভ বলে। সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া কারও উচিত নয়। মানবজীবনের ছয়টি রিপুর মধ্যে জঘন্যতম রিপু হলো লোভ। এ লোভ মানবজীবনে চরম ক্ষতি ও অনর্থ সাধন করে। লোভের বশবর্তী হয়েই মানুষ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ধীরে ধীরে সে অবৈধ ও অন্যায়ের পথে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে সে হয়ে ওঠে পশুর মতো। অন্যদিকে নির্লোভ ব্যক্তি পাপাচারমুক্ত সত্য-সুন্দর জীবন লাভ করে। সবার ভক্তি-শ্রদ্ধা অর্জন করে। লোভী ব্যক্তি ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। সমাজে সবাই তাকে ঘৃণা করে; ফলে সে করুণ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়।

আমরা ঈশপের গল্প থেকে লোভী কৃষক সম্পর্কে ভালো শিক্ষা পেতে পারি। সে খুব তাড়াতাড়ি ধনী হতে চেয়েছিল। এ অতি লোভের কারণে সে তার হাঁসটিকে হারিয়েছিল, যেটি প্রতিদিন একটি করে স্বর্ণের ডিম দিত। সুতরাং একথা মনে রাখা একান্ত প্রয়োজন যে, আমাদের পার্থিব জীবনে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। ধনসম্পদ, বিলাসিতা, ক্ষমতা প্রভৃতি কোনোকিছুর লোভ করা যাবে না, সৎপথে জীবনযাপন করতে হবে; তাহলেই জীবন সুন্দর হবে ও আমাদের জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র সুন্দর হবে। পাপী ব্যক্তির লোভ-লালসার সীমা থাকে না। সে ইচ্ছা করলেও অন্য কিছু করতে পারে না। তার স্বভাবে যে কালিমা পড়ে গেছে তা দূর করার কোনো পথ নেই।

উপসংহার: লোভের কবলে পড়ে মানুষ আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয়। লোভকে বর্জন করতে হবে। তবেই জীবন সুন্দর ও সার্থক হবে। নির্লোভ জীবনের মাঝেই নিহিত আছে প্রকৃত সুখ। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত লোভ-লালসা পরিহার করা এবং সৎপথে জীবন পরিচালনা করা।

লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ – এইচএসসি

মূলভাব: মানুষের মন্দ-প্রবৃত্তির মধ্যে একটি হল লোভ। কারণ লোভ মানুষকে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য ও সৎ পন্থা অবলম্বন করতে প্ররোচিত করে। লোভে পড়ে মানুষ পাপকার্যে জড়িয়ে পড়তে দ্বিধা করে না। এমনকি অন্যের ক্ষতি করতেও দ্বিধা করে না।

সম্প্রসারিত ভাব: লোভ মানুষের বিবেকনাবোধকেও হত্যা করে। ফলে ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা না করেই সে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে চায়। যে কোন অন্যায়ের পথে তাকে এগিয়ে নিয়ে যায় লোভ। লোভের কারণেই মানুষ অসৎ কাজে জড়িয়ে পড়ে এবং সমস্ত সত্যনিষ্ঠা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়। নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্যের যে কোন সর্বনাশ করতে মানুষ ছাড়ে না। লোভ করতে করতে এবং লোভকে চরিতার্থ করতে করতেই মানুষ পাপ নামক পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত হয়। পাপের পথে পা দিয়েই সে ক্ষান্ত হয় না, ক্রমাগত পাপ করতে করতে নিজের মধ্য থেকে মনুষ্যত্বটুকুও হারিয়ে ফেলে। জাগতিক যাবতীয় পাপের উৎসভূমি হচ্ছে লোভ। লোভের মায়াজালে আচ্ছন্ন থেকে মানুষ সত্য ও সুন্দরকে অবজ্ঞা করে এবং অসুন্দর ও অসত্যকে সানন্দচিত্তে গ্রহণ করে।

অপরপক্ষে নির্লোভী পাপাচারমুক্ত সত্য ও সুন্দর জীবন লাভ করে। কিন্তু লোভী, নোংরা, কর্দমাক্ত মানুষের বিষাক্ত নিঃশ্বাসে এ সত্যবাদী, নির্লোভীও অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। শুধু মানুষই নয় প্রাকৃতিক পরিবেশও আজ আস্তে কলুসিত হতে থাকে এবং একপর্যায়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এমনকি পারিবারিক পরিবেশও লোভের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। ভাই ভাইকে খুন করছে, নিজের দেশের সম্পদ নিজে চুরি করে আত্মসাৎ করছে। বিবেক তাদেরকে বাধা দিচ্ছে না। কারণ একটাই- তা হল লোভ। নির্লোভীর নিরাসক্ত জীবনে ভোগের তাড়না নেই বলে তার মাঝে লোভ এবং পাপের অস্তিত্ব নেই। ফলে জাতীয় উন্নতির জন্য প্রথম লোভ নামক এই পাপকে পরিহার করে দেশপ্রেমে জাগ্রত হতে হবে।

সিদ্বান্ত: তবে লোভে মানুষ যতই আকৃষ্ট হোক না কেন এই লোভই মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। কারণ লোভ হচ্ছে মানুষের পরম শত্রু। লোভ বর্জন না করলে জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করা যায় না। নির্লোভ জীবন সকলের শ্রদ্ধা ও ভক্তি অর্জন করে। কথায় আছে লোভে মানুষ পাপ করে আর পাপে মানুষের মৃত্য ঘটে, অর্থাৎ মনুষ্যত্বের মৃত্য ঘটে। মনুষ্যত্ব না থাকলে মানুষকে মানুষ না বলে পশু বলা অধিক শ্রেয়। তাই বলা যায়, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।

এই ছিল আজকে আমাদের ভাবসম্প্রসারণ লোভে পাপ পাপে মৃত্যু এর সকল ভ্যারিয়েন্ট। আশা করি শিখতে কোন সমস্যা হবে না। তারপরো অনাকাংখিত কোন সমস্যা হলে নিচে মন্তব্য করুন, আমরা সমাধান করে দিব, ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top