অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ – ক্লাস ৬, ৭, ৮, এসএসসি ও এইচএসসি: প্রিয় জ্ঞ্যান পিপাসু শিক্ষার্থীরা, তোমাদের আসন্ন পরীক্ষার জন্য অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণটি যদি সিলেবাসে থাকে, তাহলে এখান থেকে শিখে নিতে পার। এখানে আমরা বিভিন্ন ক্লাসের উপযোগী করে মোট ৩টি নমুনা দিয়েছি, তোমার কাছে যেই নমুনা সহজ মনে হবে, সেটাই শিখতে পারবে। তাহলে আর দেরি না করে সামনের পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে এখনি শেখা শুরু করে দাও।
| পোস্টের বিষয়বস্তু | ভাবসম্প্রসারণ লিখন |
| ভাবসম্প্রসারণ টপিক | অর্থই অনর্থের মূল |
| প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহ | ক্লাস ৬, ৭, ৮, এসএসসি, এইচএসসি |
| নমুনা দেয়া আছে | ৩টি |
অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ (নমুনা-১)
ভাব-সম্প্রসারণ: ধন-দৌলত বা অর্থ মানুষের জীবনে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। অর্থ ছাড়া আবার মানুষের চলে না। তবুও টাকা-পয়সা অনেক জটিলতার কারণ বলে বিবেচিত হয়। তাই অর্থের লোভ ত্যাগ করে পরিমিত ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থের সদ্ব্যবহার হওয়া উচিত।
জীবনের প্রয়োজনে মানুষ অর্থ উপার্জন করে। তা আবার খরচ হয় সংসারের কল্যাণে। জীবনে যা কিছু দরকার তার জন্য টাকার প্রয়োজন। টাকায় কী না হয়? কথায় বলে টাকায় বাঘের দুধও মেলে। এই টাকা উপার্জনের জন্য মানুষ অনেক পরিশ্রম করে। অনেকে টাকা দিয়ে অন্যায় কাজ সমাধা করে। টাকার প্রভাবে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করে। টাকা নিয়ে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে যায়। টাকায় মানুষের লোভ বেড়ে যায়। টাকার লোভে মানুষ পাপকর্মেও জড়িয়ে পড়ে।
ফলে মানুষে মানুষে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। সমাজে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যায়। অর্থের জোরে মানুষ ক্ষমতারও অপব্যবহার করে সমাজে চরম অশান্তির সৃষ্টি করে। মনে হয়, অর্থই সব অনর্থের মূল। অতিরিক্ত অর্থ থাকার কারণে সমাজে অন্যায়, অপকর্ম বেড়ে যায়। অথচ সীমিত অর্থ থাকলে জীবনের প্রয়োজন মিটে যায়, বাড়তি ক্ষতির পরিবেশ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয় না। অর্থের লোভ খুবই ভয়ংকর। আর লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু অর্থাৎ ধ্বংস অবধারিত।
অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ (নমুনা-২)
মূলভাব: জীবনে চলতে হলে অর্থের প্রয়োজন। আবার অতিরিক্ত অর্থের সোপানলে পড়েও মানুষ ধ্বংস হয়।
সম্প্রসারিত ভাব: কথায় বলে, দুনিয়াটা টাকার বশ। এ পৃথিবীতে অর্থ বা ঐশ্বর্য মানুষের একান্ত কাম্য। অর্থের জন্য মানুষ জীবনসংগ্রামে লিপ্ত হয়। এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থের চাহিদা অপরিসীম। মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত অর্থ অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। বর্তমান পৃথিবীতে একমাত্র অর্থের মাপকাঠি দ্বারাই প্রতিপত্তি ও সম্মান নির্ণীত হয়। বিপদে-আপদে, উৎসবে, জন্ম-মৃত্যুতে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। আবার অর্থের প্রতি অতিরিক্ত লোভেই মানুষ মানুষকে খুন করতে পারে। অর্থের জন্য মানুষের এ পাশবিকতা মানুষকে সর্বনাশের পথে ঠেলে দেয়। বেশি অর্থ বেশি সুখশান্তি বিরাজমান মনে করে লোভী মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য অবৈধ পথ ধরে
ফলে অন্যের ওপর অত্যাচার, অনাচার, দুর্নীতি চালিয়ে, অনেকে শোষণ করেই নিজের সমৃদ্ধি ঘটানোর চেষ্টা চালায়। পরিণামে অর্থলোভী মানুষ সমাজে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করে অনর্থ ঘটায়। অর্থ জীবনে সুখের উপকরণ। অবৈধ পথে তা উপার্জনের জন্য লোভী মানুষ তৎপর। এ লোভ মানুষকে পাপের দিকে ঠেলে দেয়, অন্যায়ের পথে পরিচালিত করে। তাই অর্থকে অনর্থের মূল বলা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
উপসংহার: জগতের সকল অশান্তি ও অনর্থের মূলে রয়েছে অর্থ। অর্থের লোভেই সীমার ইমাম হোসেনকে হত্যা করেছিল। অর্থের লোভেই মানুষ নৈতিকতা বিসর্জন দেয়। অর্থই মানুষের জীবননাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিজ্ঞ লোকেরা বলেন, ‘অর্থই অনর্থের মূল।’
আরো পড়ুন:-
অর্থই অনর্থের মূল ভাবসম্প্রসারণ (নমুনা-৩)
ভাবসম্প্রসারণ: অর্থ-সম্পদ মানব জীবনের চলার পথে অপরিহার্য হলেও এর যথাযোগ্য ব্যবহার না হলে ব্যক্তি ও সমাজজীবনে নেমে আসে অকল্যাণ।
জীবনধারণের জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। পার্থিব জীবনে অর্থ ও বিত্তই মানুষের একান্ত কাম্য। তাই অর্থ বা সম্পদের মোহে মানুষ জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হয়। অর্থ মানুষের আজীবন প্রয়োজন মেটায় বলে অর্থ ছাড়া জীবন অর্থহীন বা মূল্যহীন বলে বিবেচিত হয়। তাই প্রতিনিয়ত মানুষ অর্থের পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছে। বিপদে-আপদে, উৎসবে-আনন্দে, জন্ম-মৃত্যুতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু সেই অর্থ ও সম্পদই অনেক সময় সুখ ও কল্যাণের বদলে অকল্যাণ বয়ে আনে। জগতে সকল অপকর্মের মূলে রয়েছে মানুষের অর্থলোভ। অর্থের লোভে মানুষ নীতিহীন হয়ে অহরহ নানারকম দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়। অন্যায় পথে অর্জিত অর্থ মানুষকে বিবেকহীন, দাম্ভিক, মনুষ্যত্বহীন অমানুষ করে তোলে।
অর্থের লালসা মানুষের নৈতিক অধঃপতন ঘটায়। অর্থের লোভই মানুষকে চরিত্রহীন করে সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত করে। পৃথিবীর সকল দ্বন্দ্ব-সংঘাত, অশান্তি ও বিদ্বেষের মূলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্থই ভূমিকা পালন করছে। ধন-সম্পদের লোভেই ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের জন্য রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে যুদ্ধের উন্মাদনা জাগে, শ্রমিকে-মালিকে বাধে মতবিরোধ, ভাইয়ে-ভাইয়ে শুরু হয় চরম শত্রুতা। অর্থের লোভেই মানুষ মানুষকে খুন করে। মানুষ মানুষের রক্তে হোলি খেলে, আনন্দ করে নির্বিকার চিত্তে। তাই জগতের সব অশান্তি ও অনর্থের মূলে রয়েছে অর্থ।
আজকের অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণটি এখানেই শেষ হল, খুব বেশি বড় নমুনা দেয়া সম্ভব হয়নি। যদি আরো বড় লেখার প্রয়োজন হয়, কমেন্টে জানাবে আমি সংযোজন করে দিব। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবে।




