একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লিখন

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লিখন

আজকে আমরা একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লিখন প্রক্রিয়া শিখব। সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যেন শিখতে পারে, তাই ৪টি নমুনা সাথে ছবিসহ সাজিয়ে লিখেছি। আশা করি তোমরা উপভোগ করবে এবং সহজে শিখবে।

পোস্টের বিষয়বস্তুপত্রলিখন
আজকের পত্রের টপিকএকটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি
প্রযোজ্য শ্রেণিসমূহক্লাস ৬,৭,৮, এসএসসি, এইচএসসি
নমুনা আছে৪টি

একটি সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি

একটি সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি পাঠাও-

বাগমারা পাড়া, যশোর
১৭-১০-২৫ ইং

সুপ্রিয় ইমন,
শুভেচ্ছা নিও। আশাকরি ভালো আছ। অনেকদিন হলো তোমার কোন চিঠিপত্র পাইনি। বহুদিন হলো আমিও তোমাকে লিখিনি।

আজকে লিখতে গিয়ে তোমাকে ভালো কোন সংবাদ দিতে পারলাম না। গতকাল এখানে এমন একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে যা তোমাকে না লিখে পারছিনা। যশোর মুড়লি মোড়ে ঢাকাগামী একটি পরিবহনের বাসের সাথে ট্রাকের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। দুটি গাড়ীই দারুণভাবে বিধবস্ত হয়েছে এবং ঘটনাস্থলেই পাঁচজনেরই প্রাণহানি ঘটেছে। আহত দশজনকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে গেলে মনে হবে, রাস্তার উপর দিয়ে রক্তের বন্যা বয়ে গেছে। স্বজনদের মর্মবিদারি কান্না সহ্য করার মতো নয়। ভয়াবহ মর্মান্তিক দৃশ্য বর্ণনা করা অসম্ভব। তোমার আব্বা আম্মাকে আমার ভক্তিপূর্ণ সালাম দিও।

তোমার কল্যাণ প্রার্থনায়-
ইতি ইভান

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লেখ-

কলাবাগান, ঢাকা
৫ জুন, ২০২৫

প্রিয় রতন,
আমার প্রীতি ও ভালোবাসা নিও। আশা করি ভালো আছ। আজ আমার মনটা ভালো নেই। তাই হৃদয়ভার একটু হালকা করার জন্য তোমাকে লিখতে বসেছি।

ছোটবেলা থেকেই রাসেলের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সে শুধু আমার সহপাঠী নয়, অন্তরঙ্গ বন্ধুও। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও স্কুল ছুটি হলে আমরা ছোটাছুটি করে এসে বাসে উঠি। জানোই তো, সরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা খুব কম। এ কারণে মুহূর্তের মধ্যে বাসটি সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে গেল। এমনকি অনেক ছাত্র দরজার হাতল ধরে ঝুলছে। এমন সময় কোথা থেকে দৌড়ে এসে বাসে উঠতে চেষ্টা করল রাসেল। কিন্তু পারল না, মুহূর্তের মধ্যে পা ফসকে সে চলে গেল চাকার নিচে। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদের হৈচৈ শুরু হয়ে গেল। এই ফাঁকে ড্রাইভার উধাও। পুলিশ এসে রাসেলের লাশ মেডিকেলে নিয়ে গেল।

বাসটি আটক করা হলো। এদিকে ঘটনার আকস্মিকতায় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফিরল ততক্ষণে রাসেল পরপারে চলে গেছে। রাসেলের মৃত্যুসংবাদ আমাকে নিথর পাথরে পরিণত করল। দিনটি ছিল রাসেলের জন্মদিন। সন্ধ্যায় আমার মতো অনেক বন্ধুর নিমন্ত্রণ ছিল রাসেলের বাড়িতে। কিন্তু নিয়তির নির্মমতায় আমাদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে রাসেল চলে গেল না ফেরার দেশে। কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দৈন্য চিহ্নিত করে গেল। ইতঃপূর্বে আমিও বহুবার রাসেলের মতো চলন্ত বাসের হ্যান্ডেল ধরে উঠেছি। কিন্তু এরকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারিনি। রাসেলের মৃত্যু আমার জীবনে চিরস্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। এর পর থেকে আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, আর কোনোদিন চলন্ত যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠব না। আমার বিশ্বাস, তুমিও আমার কথা মেনে চলবে।

ইতি-
লিখন

তোমার দেখা একটি সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট একখানা পত্র

তোমার দেখা একটি সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট একখানা পত্র লেখ-

২০-০৩-২০২৬ইং
মগবাজার, ঢাকা

প্রিয় রুশাদ,
আমার শুভেচ্ছা নিও। আশা করি ভালো আছ। তোমাকে একটা মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা জানানোর জন্যই আজকের এ চিঠি লেখা।

আমরা একই ক্লাসের চার বন্ধু একত্রে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছিলাম। বেশ সতর্কভাবেই গল্প করতে করতে এগোচ্ছিলাম। স্কুলের দিকের মোড়টা ঘুরতেই হঠাৎ একটি বাস এসে আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুত চলে যায় । চারদিক থেকে ধর ধর আওয়াজ শুনে একজন লোকের সহায়তায় উঠে দাঁড়াতে গিয়ে দেখতে পাই শিহাব আর তপনকে লোকজন ধরাধরি করে গাড়িতে তুলছে। ওদের মাথা আর জামা-কাপড় রক্তে ভেজা। আমার সামনের রাস্তার অংশটায় রক্তের ধারা। ততক্ষণে স্কুলের কয়েকজন স্যার এসে গেছেন ঘটনাস্থলে। স্কুলের ছাত্ররা বেরিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আমাকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে হাসিব।

আমাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে। গিয়ে দেখলাম প্রচণ্ড ব্যথায় তপন কাতরাচ্ছে। শিহাবের তখনও জ্ঞান ফেরেনি, O.T-তে ডাক্তাররা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিহাবের বাবা-মা, বড় ভাইয়ের কান্না দেখে কেউ অশ্রু ধরে রাখতে পারছিলেন না। স্যার- ম্যাডামরা এসে আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। উত্তেজিত বড় ভাইয়াদের সামলাতে ব্যস্ত পুলিশ। কয়েকজন পুলিশসহ ও.সি সাহেব এসে জানালেন বাসসহ ড্রাইভার ধরা পড়েছে। আমার বাবা-মা এসে আমাকে দেখে কেঁদে ফেললেন। আমি তাঁদেরকে শিহাব আর তপনের কাছে যেতে বললাম। বিকেল পাঁচটায় মারা গেল শিহাব কান্নায় ভেঙে পড়েছে সবাই। শিহাবের শোকে আমি কাঁদতে পারছি না, কথাও বলতে পারছি না, কেবল স্রষ্টার কাছে ওর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আজ আর নয়। ভালো থেকো।

তোমার বন্ধু,
অপূর্ব

[বিশেষ দ্রষ্টব্য: পত্রের শেষে ডাকটিকেট সংবলিত খাম ও ঠিকানা ব্যবহার অপরিহার্য]

আরো দেখুন: বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বা স্মরণীয় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বা স্মরণীয় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখ-

মিরপুর, ঢাকা
১৫ই জুলাই, ২০২৫

প্রিয় শ্রেয়ান,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। তোমার চিঠি ঠিক সময়েই পেয়েছি। কিন্তু আমার মনের আকাশ আজ বেদনার বিষণ্ন মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে আছে বন্ধু। গতকাল আমি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। বস্তুত আমি নিজেও ওই দুর্ঘটনার শিকার ছিলাম। ভাগ্যের জোরে অল্পের জন্য আমি প্রাণে বেঁচে গেছি। কিন্তু ঘাতক ট্রাক চিরতরে কেড়ে নিয়েছে আমার সহপাঠী সুব্রতকে। এ দুর্ঘটনার যে বীভৎস রূপ দেখেছি, তা সত্যিই ভোলার নয়। এ রকম একটি মর্মন্তুদ ঘটনা চিরদিন আমার স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে। তোমাকে এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিচ্ছি।

গতকাল কলেজ ছুটির পর, আমি আর সুব্রত একসঙ্গে হাঁটছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল একসঙ্গে বাসে চড়ব। মিরপুর ১১, বাস স্ট্যান্ডের কাছে আসতেই ফিরে দেখি একটা দানব ট্রাক উন্মত্তের মতো আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। মূল সড়ক ছেড়ে হঠাৎ ফুটপাতে উঠে গেল ঘাতক ট্রাকটি। আমি দ্রুত পশ্চিম দিকে সরে গেলাম এবং সুব্রতকে আমার দিকে জোরে টান দিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারিনি। আমি অল্পের জন্য রেহাই পেলেও সুব্রত ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাই। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছিল। আমি কী করে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলাম, তা আমার নিজেরই অজানা। ট্রাফিক পুলিশ ও উপস্থিত মানুষ ট্রাকটিকে সঙ্গে সঙ্গে আটক করে। পুলিশ ড্রাইভারকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। জনতার কয়েকজন আমাকে সহযোগিতা করে। তারপর আমরা সুব্রতর লাশ নিয়ে তার বাড়িতে যাই।

সে সময় যে কী হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়, তা তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না। সুব্রতর মা-বাবা পাগলের মতো আর্তনাদ করতে থাকেন। ওর ছোটো বোনটি ওর লাশের ওপর পড়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে দাদা দাদা বলে ডাকতে থাকে। সে করুণ দৃশ্যে আমি বেশিক্ষণ চোখ রাখতে পারিনি। অশ্রুসিক্ত চোখে লোকের ভিড় ঠেলে বাইরে এসে দাঁড়াই। সে দৃশ্য যেন আমাকে বারবার জ্ঞানশূন্য করে তুলছিল। ওহ্, সে দৃশ্য আমি কোনোদিন ভুলতে পারব না। কাল থেকে এখন পর্যন্ত আমি জল ছাড়া আর কিছু খাইনি; আমার গলা দিয়ে কিছু নামছে না। এ রকম জ্বালাময় দুঃসহ স্মৃতিকে আমি মন থেকে কিছুতেই মুছে ফেলতে পারছি না। কাল সমস্ত দিন অস্থির বেদনাহত অবস্থায় অতিবাহিত করেছি। তোমাকে বলে সেই ব্যথার ভার ঈষৎ হালকা হলো। আজ আর বিশেষ কিছু বলার নেই। সাবধানে থেকো। তোমার বাবা-মাকে আমার প্রণাম দিও।

ইতি তোমার প্রীতিমুগ্ধ-
সৃজন

[পত্র লেখা শেষে খাম এঁকে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয় ]

এই ছিল ৪টি চমৎকার পত্রের নমুনা লিখন। আমরা খুবই সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছি। কোন সমস্যা হলে আমাদের জানাবে, আমরা সমাধান করে দিব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top